দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও দুর্গাপুর পৌর দিয়ে শত শত বালু ভর্তি অবৈধ ট্রাক্টর (লড়ি) চলাচলের বিকট শব্দদূষণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পৌরশহরবাসি। প্রতিদিন এসব ট্রাক্টর পৌর শহরের পশ্চিমে সোমেশ^রী নদী থেকে বালু নিয়ে শহরের উপর দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায়। বেশির ভাগ ট্রাক্টরের চালকের নেই কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স। প্রায় ২৪ঘন্টাই শহরের উপর দিয়ে ট্রাক্টর চলাচল করায় বিকট শব্দ ও হর্ণের আওয়াজে রাস্তার উভয় পাশের বসতবাড়ির লোকজন চরম ভাবে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন।
প্রতিদিন ভোর রাত থেকে গভীর রাত পর্যন্ত একটানা বালু ভর্তি ট্রাক্টরগুলো অবিরাম দ্রæত গতিতে চলতে থাকে। দিনের বেলায় অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে ট্রাক্টর চলাচলে পৌরশহরে অবস্থিত ৯টি স্কুল, ৫টি মাদরাসা ও ৩টি কলেজসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিরাপদে রাস্তায় চলাচল করতে পারছে না। দ্রুতগতির ট্রাক্টরের ভয়ে শিক্ষার্থীরা সর্বদা দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রাস্তা পারাপার হয়ে থাকে। বিশেষ করে দি চাইল্ড লার্নিং হোমস, দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দি চাইল্ড প্রিপারেটরী স্কুল, দ্বীনি আলীম মাদরাসা, সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয়, দুর্গাপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ এর শিশুদের একা একা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে ভয়ে থাকতে হয় অভিভাবকদের। এ এলাকায় ৪টি মসজিদের নামাজিরা বিকট শব্দে ঠিকমতো নামাজ আদায় করতে পারে না। প্রতিদিন উপজেলা পরিষদগামী ও পৌরশহরের বাজারে যাওয়া মানুষকে জীবনের ঝুকি নিয়ে রাস্তা চলাচল করতে হয়। বালু ভর্তি ট্রাক্টরগুলোর বিকট শব্দে আশপাশের বসতবাড়ির ছোট-ছোট শিশুরা দিনের বেলায় ঘুমোতেও পারে না। ধুলোয় বসতবাড়ির লোকজন শ্বাসকষ্ট ও শ্রবণ জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
পৌরশহরের পথচারী লিটন মিয়া জানান, আমার ঘুম ভাঙ্গে লড়ির শব্দে আর ঘুমাতে যাই লড়ির শব্দে। ট্রাক্টরের ভয়ে রাস্তায় ঠিকমতো যাতায়াত করা যায় না। পৌরশহরের উপর দিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক্টর চলায় এমন অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিদিন। ট্রাক্টর এলেই রাস্তা ছেড়ে দিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অনভিজ্ঞ ও কম বয়সী চালকেরা পাল্লা দিয়ে লড়ি চালানোর ফলে প্রায় প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা।
কৃষি বান্ধব সরকারের ভর্তুকি দেওয়া ট্রাক্টর জমি চাষাবাদ না করে মালবাহি হিসেবে ব্যবহার করায় প্রতিনিয়তই দূর্ঘটনা ঘটেই চলছে। কেড়ে নিচ্ছে কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থীসহ বেশ কিছু জনপ্রাণ। এ নিয়ে একাধীকবার মিছিল, মিটিং ও মানববন্ধনসহ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হলেও এর কোন প্রতিফলন ঘটছেনা।
একদিকে যেমন শব্দ দূষণ অন্য দিকে জনপ্রান কেড়ে নেওয়ায় এ আত্মঘাতি যন্ত্রটি নিয়ে এলাকায় আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রশাসন কেনো কিছু করছে না, এনিয়ে স্থানীয়রা নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ রুহীর দৃষ্টি আকর্ষন করছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম প্রিন্স যুগান্তর কে বলেন, গত বুধবার মাসিক সমন্বয় সভায় এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পরবর্তি সভায় এনিয়ে বিশদ আলোচনা করবো। পৌরশহরের উপর দিয়ে ট্রাক্টর চলাচলের বিষয়টি সত্যি বেমানান।
এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে অচিরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।