দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনা দুর্গাপুর উপজেলার শেষ সীমানাস্থল ঘেঁষে কংস নদ। আর এই নদের ডেওটুকোন ফেরিঘাট দিয়ে নৌকা পানাপারের মাধ্যমে উপজেলার মানুষ বিভিন্ন কাজের জন্য যেতে হয় জেলা শহর নেত্রকোনায়। তবে নৌকা পারাপারে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রতিবাদ ও সমালোচনার ঝড়।
যাত্রীদের অভিযোগ, একবার নৌকায় উঠলেই আগের চেয়ে দুইগুণ বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে। পারাপারে নির্ধারিত ভাড়া আদায়ের চার্ট টানানো নেই ফেরিঘাটে। বাড়তি টাকার বিষয়টি প্রতিবাদ করলে নৌকার মাঝির রোষানলে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। অপরদিকে ঘাটের ইজারাদার বলেছেন, বেশি টাকায় ফেরিঘাট ইজারা নেওয়া হয়েছে। তাই একটু বেশি টাকা নেয়া হচ্ছে।
সূত্র জানায়, কংস নদের ডেওটুকোন ফেরিঘাট পারাপারের ইজারা পরিচালনা করছেন নেত্রকোনা জেলা পরিষদ। প্রতিবছর বাংলা সনের চৈত্র মাসের শেষ দিকে নতুন করে ইজারা দেয়া হয়। কার্যকর করা হয় পহেলা বৈশাখের প্রথম দিন থেকে। পূর্বের সময়ে নৌকা পারাপারে সঠিকভাবে ভাড়া আদায় করলেও এ বছর পারাপারে ইজারাদার বাড়তি টাকা আদায় করছে বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। নৌকায় পারাপারে জনপ্রতি ৫ টাকার স্থলে এখন ১০ টাকা, চালকসহ মোটরসাইকেল ১০ টাকার স্থলে ২০ টাকা এবং মোটরসাইকেলসহ দুইজনের এখন ৩০ টাকা, সিএনজি ও অটোরিক্সা থেকে নেয়া হয় ইচ্ছে মতো ভাড়া। এদিকে নির্ধারিত ভাড়া আদায়ের চার্ট গণমাধ্যমকর্মীদের দেখাতে বললে, নৌকার মাঝি জানায় চার্ট তার বাড়িতে আছে। এ সময় তার নাম জানতে চাইলে, নাম বলতে অস্বীকৃতি জানায় তিনি।
নৌকার যাত্রী শামছুল আলম খান বলেন, আমরা দুর্গাপুরের মানুষ জেলা শহরে যোগাযোগ করতে হলে একমাত্র ডেওটুকোন ফেরিঘাট পার হয়ে যেতে হয়। বর্তমানে বাড়তি টাকা দিয়েই যাচ্ছি, কিন্তু সবার পক্ষে তো আর বাড়তি ভাড়া দেয়া সম্ভব না। এটা জুলুম করা হচ্ছে।
স্কুল শিক্ষক জুয়েল মিয়া বলেন, ইঞ্চিনচালিত নৌকায় এটুকু নদী পার হতে দুই মিনিটের বেশি লাগে না কিন্তু জনপ্রতি ১০ টাকা নিচ্ছে। এমন ঘটনা কোথাও দেখিনি।
এ নিয়ে ফেরিঘাটের ইজারাদার বাবুল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রায় ৪০ লাখ টাকায় ফেরিঘাট ইজারাদার নিয়েছেন। নৌকা পারাপারে বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে, জেলা পরিষদে অভিযোগ পরিষদ দিতে বলেন বাবুল মিয়া।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা খন্দকার জানান, ওই ঘাটে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে এমন অভিযোগ পেয়েছি আমরা। পরবর্তিতে বাড়তি ভাড়া আদায় না করতে ইজারাদারকে বল্লে এক দুই মাস বন্ধ রেখে পুনরায় বাড়তি ভাড়া আদায় মুরু করেন। এখন আবারও লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে তদন্তের নির্দেশও দেয়া হয়েছে, আশা করছি সমাধান হয়ে যাবে।