
পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুর জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলার ৩ নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. চাঁন মিয়া মাঝিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে পিরোজপুর সদর উপজেলার দুর্গাপুর নিজ গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, পিরোজপুর সদর থানায় গত ৭ এপ্রিল পিরোজপুর জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য জহিরুল ইসলাম কলিম বাদী হয়ে মো. চাঁন মিয়া মাঝিসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যার পরিকল্পনা, ঘর ভাঙচুর, লুটপাট, গুলিবর্ষন ও বোমা বিস্ফোরণ এবং চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় চাঁন মিয়া মাঝি ছাড়াও তার ছেলে মুরাদ হোসেন মাঝি, ভাগ্নে পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার, ভাই হারুন অর রশিদ বাদশা, মো. মাসুদ মাঝি, রশিদ শাহরিয়ার মাঝি, লোকমান হোসেন হাওলাদার, মহিউদ্দিন হাওলাদার ঝন্টু, সামশুদ্দিন কালু, মো. সাখাওয়াত হোসেন মল্লিকসহ অজ্ঞাত ২৫/৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ হয়, আওয়ামী লীগের সরকারের সময়ে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জোট মনোনীত প্রার্থী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে আলহাজ শামীম বিন সাঈদী ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ধানের শীষের পক্ষে তৎকালীন জেলা বিএনপি সদস্য মো. জহিরুল ইসলাম কলিম নির্বাচন করতে ঢাকা থেকে পিরোজপুরের দুর্গাপুরের বাড়িতে এলে পিরোজপুর জেলা কৃষক লীগের সভাপতি চাঁন মিয়া মাঝির নেতৃত্বে ২০১৮ মালের ২৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ২০/২৫ জন অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী বাহিনী পিরোজপুর সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের চাঁন মিয়া মাঝির বাড়ির সামনের ব্রীজের ঢালে তার (জহিরুল ইসলাম কলিম) গাড়ি থামিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে এবং গাড়ির মধ্যে থাকা ধানের শীষ প্রতীকের পোষ্টার ও লিফলেট ছিনিয়ে নেয়।
ওইসময় হামলাকারীরা কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে এবং তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ ঘটনার পরের দিন ২৯ ডিসেম্বর বিকেল ৫ টার দিকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা জেলা কৃষক লীগের সভাপতি চাঁন মিয়া মাঝির নেতৃত্বে ৫০/৬০জন সন্ত্রাসী আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা, চাইনিজ কুড়াল, রামদা, হকিস্টিক ও দেশীয় লাঠিসোটা নিয়ে জহিরুল ইসলাম কলিমের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা কলিমের বাড়ির সামনে বন্দুক ও পিস্তল দিয়ে ২০/২৫ রাউন্ড গুলি ও ৮/১০টি বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করে। ঘরে প্রধান ফটক দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর ও তান্ডব চালায়। এসময় তারা স্বর্ণালঙ্কার ও মালামাল লুটপাট করে এবং তারা কলিমের বৃদ্ধ মায়ের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ও কলিমকে হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনার পরে জীবন বাঁচাতে কলিম পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে যায়।
পিরোজপুর সদর থানার ওসি মো. রবিউল ইসলাম কৃষক লীগ নেতা চাঁন মিয়া মাঝির গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ২০১৮ সালের একটি ঘটনার বিষয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা চলমান রয়েছে।