এস এম নাসির মাহমুদ,আমতলী প্রতিনিধিঃ
নির্মানের ৩৮ বছর ধরে সংস্কার না করায় বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র। একই অবস্থা আবাসিক ভবনেরও। দীর্ঘদিন ধরে ভবন দুটি সংস্কার না করায় ছাদের পলেস্তারার খসে পড়েছে। ভয়ে এখন আর কেউ ভিতরে বসে চিকিৎসা সেবা নিতে চান না।
আমতলী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৫ সালে আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম মাহবুবুর রহমান ঝন্টু তালুকদারের দানের দেড় একর জমির উপর ৩৯ হাজার ২শ’ ১২ জন মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকার ২৬ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৫ কক্ষের একটি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র ও ৬ কক্ষের একটি আবাসিক একতলা ভবন নির্মান করেন। ভবন নির্মানের পর এ পর্যন্ত আর কোন সংস্কার না করায় ভবন দুটি বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। চিকিৎসা দেওয়া ভবনটির ছাদের পলেস্তারার খসে পড়ায় বর্ষা মৌসুমে ছাদ চুয়ে পানি পড়ে মেঝ তলিয়ে যায়। দেয়ালের পলেস্তারার উঠে ইট বেড়িয়ে গেছে। কাঠের দরজা জানালা খুলে পরেছে। ছাদের পলেস্তারার খসে পড়ে সাম্প্রতিক সময়ে এক রোগী আহত হওয়ায় এখন স্যাকমো এবং ভিজিটর ভিতরে বসে চিকিসা সেবা দিতে ভয় পাচ্ছেন। রোগীরাও ভিতরে প্রবেশ করতে চান না। চেয়ার টেবিলের ও করুন অবস্থা। ৬ কক্ষের আবাসিক ভবনটিও বেহাল অবস্থার কারনে এখানে এখন আর কেউ বসবাস করেন না। ছাদের এবং দেয়ালের পলেস্তারার খসে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে পানিতে ভবনের ভেতরে অংশ তলিয়ে যায়।
শনিবার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভবন দুটির বেহাল দশা। সংস্কারের অভাবে চিকিৎসা কেন্দ্রের ছাদের এবং দেয়ালের পলেস্তারার খসে পড়েছে। কাঠের দরজা জানালা নেই বললেই চলে। ডাক্তার, স্যাকমো, ভিজিটর ও পিয়নের বসার মত চেয়ার টেবিলও নেই। রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে গেলে দাড়িয়ে থাকতে হয়। আবাসিক ভবনেরও একই অবস্থা। দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের মোশারফ হোসেন মোল্লা জানান, হলদিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রটি হলদিয়া ইউনিয়ন বাসীর চিকিসা সেবা নিশ্চিত করতে গুরুত্ব পূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে। গ্রামে বসেই বয়স্ক নারী এবং পুরুষরা ডাক্তার দেখাতে পারে। তাই এটি জরুরী ভাবে সংস্কার করা প্রয়োজন।
একই গ্রামের ষাটোর্ধ আলেয়া বেগম বলেন, মোরা ডাক্তার দেহাইতে যাইয়া বইতে পারি না। চেয়ার টেবিল নাই। দালাডা এক্কেবাড়ে খারাপ অইয়া গ্যাছে। বইষ্যা কালে খালি পানি পরে। দরজা জানালাও খুইল্যা পড়ছে। হেইয়ার লইগ্যা এই হানে আইলে খালি ডর করে।
হলদিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে কর্মরত স্যাকমো অনুজ রায় জানান, সংস্কারের অভাবে চিকিসা কেন্দ্রের বেহাল দশার কারনে এখানে বসে ঠিকমত চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায় না। ভয়ের মধ্যে থাকি কখন আবার পলেস্তারার খসে মাথায় পরে। আবাসিক ভবনেরও একই অবস্থা।
আমতলী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, হলদিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র ও আবাসিক ভবন সংস্কারের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।