জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
রমজান মাস শেষে মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। তীব্র গরমের মৌসুমে ঈদ বিনোদন যাতে খানিকটা আরামদায়ক হয়, সে কারণে জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলোও সাজানো হয়েছে নতুন করে। মেরামত, সংস্কার, ঘষা-মাজা, রং-তুলিসহ ছায়া ঘেরা পরিবেশে দর্শনার্থীদের কোমল আনন্দ দিতে বিনোদনগুলো প্রস্তুত করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জয়পুরহাট জেলা শহরে শিশু উদ্যান ও হাউজিং এস্টেট পার্ক, পাঁচবিবি উপজেলা শহরে পৌর পার্ক ছাড়াও লোকমা জমিদার বাড়ি,পাথরঘাটায় হযরত নাসির উদ্দিন শাহ বা নিমাই সন্ন্যাস্যের প্রাচীন কীর্ত্তি, কালাই উপজেলার ঐতিহাসিক নান্দাইল দীঘি এবং ক্ষেতলাল উপজেলার প্রাচীন আচরাঙ্গা দীঘি- জয়পুরহাটের এই ৬টি ছোট বড় বিনোদন কেন্দ্র ঈদের তৃতীয় দিন পর্যন্ত ছিল উপচেপড়া ভিড়।
জয়পুরহাটে সরকারিভাবে কোন বিনোদন কেন্দ্র না থাকলেও একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র শিশু উদ্যান অবস্থিত জেলা শহরের বুলুপাড়া এলাকায়। শিশু উদ্যানটির নামকরণ শিশুদের নিয়ে হলেও এখানে শিশু, কিশোর, তরুণ, বৃদ্ধসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ আসেন। আর ঈদ-পূজা, বড় দিনসহ সকল ধর্মের নানা উৎসবকে ঘিরে জমে উঠে এই বিনোদন কেন্দ্রটি। তেমনি এবারের ঈদেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন হাজারো মানুষ।
ঈদ উৎসবে যোগ দিতে শিশু-কিশোরসহ জয়পুরহাটের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন হাজার হাজার নারী-পুরুষ। প্রচণ্ড খরতাপ উপেক্ষা করে ঈদের ছুটি কাটাতে দর্শনার্থীদের বাঁধ ভাঙা ভিড়ে এখন মুখরিত জয়পুরহাটের বিনোদনকেন্দ্রগুলো। দর্শনার্থীদের আনন্দ অনুভূতিই জানান দেয় কতটা মহাসুখে ঈদের সময়গুলো পার করছেন তারা।
শিশু উদ্যানে আসা জয়পুরহাট পৌর শহরের শাপলা নগর এলাকার শিশু আব্দুল্লাহ ও রাইহা তাওসিন নওশি, দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি উপজেলা থেকে আসা শিশু শাফিন আহম্মেদ ও বিরামপুর উপজেলার বিভাসহ অনেক শিশুরা জানায়, ঈদ উপলক্ষে শিশু উদ্যানে এসেছি, বিভিন্ন রাইডে চড়েছি, খুব মজা করলাম।
জেলা শহরের শিশু উদ্যানে আসা বগুড়ার শেরপুর উপজেলার নজরুল ইসলাম ও নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার বুলবুল হোসেন ও তুহিন হোসেন ও পাঁচবিবি উপজেলা শহরে পৌর পার্কে আসা এম এ আজিজসহ অনেক দর্শনার্থী জানান, ঈদ উপলক্ষে বাচ্চাদের পার্কে নিয়ে এসেছি। অন্য দিনগুলোতে সময় পাওয়া যায় না ঈদের সময় ছুটি থাকে এজন্য এ সময়টাকেও কাজে লাগানো যায়। এছাড়াও বাচ্চারা খুব ঘুরতে পছন্দ করে।
জয়পুরহাট শিশু উদ্যানের ব্যবস্থাপক আপেল মাহমুদ বলেন, প্রতি বছরের মত এবারেও শিশু উদ্যানটিতে এই ঈদে ভিন্ন স্বাদের নির্মল আনন্দ দিতে কোন কার্পণ্য করা হয়নি। এছাড়া দর্শানর্থীদের পছন্দ ও নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জয়পুরহাট পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম বলেন, আনন্দঘন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঈদ-উল-ফিতরের আনন্দ উদযাপনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কয়েক স্তরে সাজিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী জানান, ঈদ উৎসবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য চেকপোষ্ট বসানোসহ সকল ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে বলা হয়েছে।