আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি নির্বিঘ্ন করতে তথাকথিত শস্য চুক্তিতে আবারও ফিরতে রাজি রাশিয়া। তবে এর জন্য শর্ত বেঁধে দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, রুশ পণ্য রপ্তানিতে পশ্চিমা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার হলেই শস্য চুক্তিতে ফিরে আসবেন তারা।
গত সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, আমরা শস্য চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার সম্ভাবনা বিবেচনা করতে প্রস্তুত… রাশিয়ার কৃষিপণ্য রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে সমঝোতাগুলো সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সেটি করবো।
জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় সই হওয়া শস্য চুক্তিতে থেকে গত জুলাই মাসে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয় রাশিয়া। মস্কোর অভিযোগ, চুক্তির পরেও রুশ খাদ্যশস্য ও সার রপ্তানি বাধার মুখে পড়েছে। তাছাড়া ইউক্রেন থেকে যথেষ্ট পরিমাণ শস্য চাহিদাসম্পন্ন দেশগুলোতে যাচ্ছে না।
রাশিয়াকে এই শস্য চুক্তিতে ফেরানোর লক্ষ্য নিয়ে সোমবার পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন এরদোয়ান। এর আগে, এই চুক্তিতে রুশ প্রেসিডেন্টকে রাজি করানোর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।
এরদোগানের প্রধান পররাষ্ট্র নীতি ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা আকিফ কাগাতে কিলিক এ হাবের টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমরা সতর্ক রয়েছি। তবে সফল হবো বলে আশা করছি।
শস্য চুক্তির লক্ষ্য ছিল, কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য বিশ্ববাজারে পৌঁছানো এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট কমানো। জাতিসংঘের অভিযোগ, গত বছর ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর থেকে বৈশ্বিক খাদ্য সংকট আরও বেড়েছে।
রাশিয়া এবং ইউক্রেন বিশ্বের দুই প্রধান কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী দেশ। বিশ্ববাজারে গম, বার্লি, ভুট্টা, রাইসরিষা, রাইসরিষার তেল, সূর্যমুখী বীজ এবং সূর্যমুখী তেলের অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী তারা।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়া শস্য চুক্তিতে ফিরবে, যদি একই সময়ে পশ্চিমারা রাশিয়ার খাদ্য ও সার রপ্তানির সুবিধার্থে জাতিসংঘের সঙ্গে হওয়া একটি পৃথক চুক্তির শর্তগুলো পূরণ করে।
যদিও রাশিয়ার খাদ্য ও সার পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত। তবে মস্কো বলছে, অর্থপ্রদান, লজিস্টিকস এবং বিমার ওপর বিধিনিষেধ এসব পণ্য রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টি করছে।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছিলেন, তিনি ইউক্রেনের শস্য চুক্তি পুনর্বহালে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের কাছে ‘একগুচ্ছ পাকাপোক্ত প্রস্তাব’ পাঠিয়েছেন।
মস্কোর প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে একটি হলো, রুশ কৃষি ব্যাংককে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেম সুইফটে আবারও যুক্ত করা। ইউক্রেনে রুশ অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় আরোপিত ব্যাপক নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে ২০২২ সালের জুন মাসে এটি বন্ধ করে দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
সূত্র: রয়টার্স, এনডিটিভি