মোঃ সোহরাব,বরগুনা সংবাদদাতাঃ
বরগুনা জেলার, তালতলী উপজেলার , ৩নং কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত , পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার সোনাতলা মৌজার, আন্দার মানিক নদীর ভরাটকৃত চরের খাস জমিতে জোর পূর্বক বে-আইনীভাবে ভূমিহীন সাজিয়া ভূয়া কার্ড সৃষ্টি করিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বনের গাছপালা কেটে বেকুর মাধ্যমে মাটি কেটে বেড়ীবাঁধ দিয়ে অবৈধ ভাবে মৎস্যঘের তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে এলাকার ভূমি দস্যু আঃ রব হাওলাদার, মোশারেফ, বিমল চন্দ্র মিস্ত্রি, শাহআলম, আঃ মালেক, আল আমিন, শাহিন, ফিরোজ খাঁনদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা বলেন, যে সকল জমি ধান চাষযোগ্য সেই শ্রেণির জমি ভূমিহীনদের মাঝে দেয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও অভিযুক্তরা যে সকল জমি দখল করছে সেখানে ধান চাষ না করিয়া অবৈধভাবে মৎস্যঘের তৈরি করছেন অভিযুক্তরা। যাহা নীতিমালার পরিপন্থী।
তাছাড়া উক্ত জমিতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য সরকারি ভাবে কেওড়া, ছৈলা, বাইনগাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ তালতলী বন বিভাগ কর্তৃক রোপন করা হয়েছে। এগুলি দেখভাল করার জন্য রয়েছে বন বিভাগের একজন দায়িত্ব প্রাপ্ত বিট কর্মকর্তা। কিন্তু অভিযুক্ত ভূমি দুস্যরা ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ বেড়ীবাঁধ তৈরিতে সরকারি ভাবে রোপনকৃত হাজার হাজার বনের গাছ কেটে উজাড় করছে। যে গাছগুলো বেড়ীবাঁদের মধ্যে রয়েছে তাহা পানিবন্ধ হয়ে পড়লে সকল গাছগুলো মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এলাকার ভুক্তভোগীরা জানান ওয়াপদার বেড়ীবাঁধের ভিতরে শত শত ঘরবাড়ী রয়েছে। ভুমি দস্যুরা উক্ত গাছগুলো কাটিয়া বিনষ্ট করায় যেকোনো মুহুর্তে প্রাকৃতির দূর্যোগ সৃষ্টি হইলে ওয়াপদার ভেড়ীবাঁধ সংলগ্ন ঘর বাড়ীগুলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান। অভিযুক্ত ব্যাক্তিরা ভূয়া কার্ড সৃষ্টি করিয়া মাছ চাষের জন্য অবৈধভাবে বেড়ীবাঁধ তৈরি করায় যেসকল গাছগুলো কাটিয়াছে তাহাতে পরিবেশের অপুরনীয় ক্ষতি হয়েছে। গাছগুলো বেড়ীবাঁধের ভিতরে এবং বাহিরে থাকায় ওয়াপদাসহ সকল পরিবার পরিজন বন্যার হাত হইতে রক্ষা পেয়ে আসছে।
স্থানীয় সচেতন মহল ও রাস্তা বেরীবাদের সভাপতি আকব্বর হাওলাদার বলেন ২০০৬-০৭ সালের বন্দোবস্ত কেস নং-৫৫৭ , ৯২৪, ৭৭০, ৮৩৩, ৬৪১ , ৭৪৪ উল্লিখিত কেস হইতে বরগুনা জেলা প্রশাসক প্রত্যক্ষ কার্ড দাড়িকে ১ একর করে জমি বন্দোবস্ত দেন। অথচ বিতর্কিত জমিটি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার, সোনাতলা মৌজার, জেএল নং ২৩, খতিয়ান নং ৩০১ দাগ নং ৩০১ ৩০২, মোট জমি ২৪ একর ২৭ শতাংশ, এ সংক্রান্ত বিষয় মৃত, আঃ আজিজ হাওলাদারের ছেলে মোতালেব হাওলাদার তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ভূমি দস্যু আঃ রব হাং, বিমল চন্দ্র মিস্ত্রি, মোঃ মোশারেফ, মোঃ শাহআলম, আঃ মালেক, মোঃ আল আমিনদের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা কড়ইবাড়ীয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস তালতলী, বরগুনা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুমি অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা গত ২০ জুন ২০২৩ ইং সরেজমিনে তদন্ত করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এহেন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারনে উপরোক্ত বন্দোবস্ত কেস সমূহ বাতিলের সদয় সুপারিশ সহকারে তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। উক্ত ঝাড়াখালী মৌজার নদীর ভরাটকৃত চরের সরকারি খাস জমিতে বে-আইনীভাবে ভেড়ীবাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করিতে না পারে, তাহার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে শাড়িকখালী, নলবুনিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস কর্মকর্তা, রুহুল আমিন বলেন, বন বিভাগের বড় বড় গাছ রয়েছে ওই গাছের বাগানে বন্দোবস্ত কার্ড দেয়ার কোন সুযোগ নেই। যারাই পেয়েছেন অফিসকে ভুল তথ্য দিয়েই পেয়েছেন। তাছাড়া কার্ডের জমি বিক্রি করার নিয়ম বহির্ভূত। আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি ঘটনার সততা পেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছি।
তবে এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, সরকারি জমিতে যদি বন বিভাগের কোন গাছপালা লাগানো থাকে তাহলে ওই জমি বন্দোবস্ত কার্ড দেয়ার কোনো সুযোগ নেই, দেওয়া থাকলে প্রয়োজনে কার্ড বাতিল করা হবে। তাছাড়া জমি যদি পটুয়াখালী জেলার আওতাধীন হয়ে থাকে তাহলে কলাপাড়া ভূমি কমিশনারের সাথে কথা বলে সঠিক তথ্য অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারি জমি জোর জবর দখল করার কারো সুযোগ নেই জানান উপজেলার এই শীর্ষ কর্মকর্তা।