কাজী নজরুল ইসলাম,চাঁদপুরঃ
চাঁদপুরে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে সড়ক থেকে জোর করে তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মো. রিপন প্রধানিয়া (৩৫) নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
সোমবার (৩০ মে) বিকেলে চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী এ রায় দেন।
রিপন প্রধানিয়া সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের মৃত নোয়াব আলী প্রধানিয়ার ছেলে।
এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের পৃথক ধারায় (৭ ধারায়) অপহরণের দায়ে আসামিকে আরও ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে ওই স্কুলছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিতেন রিপন প্রধানিয়া। বিষয়টি ওই ছাত্রী তার পরিবারকে জানায়। পরে মেয়ের বাবা রিপন প্রাধানিয়াকে অনুরোধ করে বলেন মেয়েকে যেন বিরক্ত না করে। এতে ক্ষিপ্ত হন রিপন।
২০২০ সালের ২৬ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই স্কুলছাত্রী স্থানীয় একটি দোকানে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে যায়। সেখানে আগে থেকে ওত পেতে থাকা রিপন ও তার সহযোগীরা তাকে জোর করে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নেন। রিপনের বাড়িতে নিয়ে কোমল পানীয়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে তা ওই স্কুলছাত্রীকে পান করানো হয়। এরপর তাকে ধর্ষণ করেন রিপন।
ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, মেয়েকে তুলে নেয়া হয়েছে জানতে পেরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। পরে তিনি ওই দিন রাতে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় বিষয়টি জানান এবং রিপন প্রধানিয়াকে আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার ও রিপনকে গ্রেপ্তার করেন।
মামলাটি তদন্ত করেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) পলাশ বড়ুয়া। তিনি ২০২০ সালের ৩০ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
মামলার সরকারি কৌঁসুলি সাইয়েদুল ইসলাম বলেন, মামলায় গত ৩ বছরে ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসামির উপস্থিতিতে বিচারক এ রায় দেন।