নিজেস্ব সংবাদদাতা, বরগুনাঃ
বরগুনায় সেতু ভেঙ্গে নয়জন নিহতের ঘটনায় দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অনিমেষ বিশ্বাসকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়।
শনিবার (২২ জুন) রাতে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জমা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। অপর দিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর আরেকটি তিন সদস্য কমিটি গঠন করেছে।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলা কাউনিয়া ই্ব্রাহিম একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের মাসুম বিল্লাহ মনিরের মেয়ে মরিয়ম বিল্লাহ হুমায়রার সঙ্গে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমতলী পৌর শহরের খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা সেলিম মাহমুদের ছেলে ডা. সোহাগের বিয়ে হয়। গত শুক্রবার ওই কনেকে বরের বাড়ি তুলে নেন। শনিবার মেয়ের পক্ষের লোকজন বরের বাড়িতে মাইক্রোবাস এবং অটো গাড়ীতে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে হলদিয়া হাট সেতু পাড় হওয়ার সময় সেতুর মাঝের অংশ ভেঙ্গে মাইক্রোবাস ও অটো গাড়ী নদীতে তলিয়ে যায়। অটোতে থাকা যাত্রীরা সকলে সাতরে কিনারে উঠতে পারলেও মাইক্রোবাসের যাত্রীরা নদীতে তলিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা ওই মাইক্রোবাসে থাকা লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী নাশির উদ্দিন। ততক্ষণে মাইক্রোবাসে থাকা কনে পক্ষের ৯ যাত্রী নিহত হয়েছে।
এ ঘটনায় বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম ছয় সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অনিমেশ বিশ্বাসকে প্রধান এবং আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী পুলিশ সুপার আমতলী সার্কেল রুহুল আমিন, এলজিইডির বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খাঁন, বিআরটিএ সহকারী পরিচালক মাহফুজ আহমেদ, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স উপ-সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গির আলম। সাত কার্যদিবসের মধ্যে অনুসন্ধানপুর্বক তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অপর দিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতর তিন সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। পটুয়াখালী তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মহির উদ্দিন শেখকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন নির্বাহী প্রকৌশলী এসি অফিস বরিশাল নুরুস সাম ও এলজিইডি বরগুনা সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান। রোববার (২৩ জুন) তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কাজ শুরু করেছেন।
এদিকে শনিবার গভীর রাতে আমতলী থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা চেইন কপ্পা দিয়ে নদীতে ডুবে যাওয়া মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করেছে।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, চেইন কপ্পা দিয়ে মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। ওই মাইক্রোবাসের মধ্যে আর কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান বলেন, বরগুনা জেলা প্রশাসক ছয় সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান বরগুনা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অনিমেশ বিশ্বাস বলেন, তদন্ত কাজ শুরু করেছি। রোববার আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে সভা শেষে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ছয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাদের অনুসন্ধানপুর্বক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। প্রতিবেদনের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।