এস এম নাসির মাহমুদ,আমতলী প্রতিনিধিঃ
কলাপাড়া চাঞ্চল্যকর নববধু চম্পা হত্যা মামলার ফের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার কলাপাড়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আশিষ রায় অধিকতর তদন্তের জন্য পটুয়াখালী ডিবি’র ওসিকে পুনরায় তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
জানাগেছে, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি তালতলী উপজেলার কলারং গ্রামের চাঁন মিয়া সিকদারের কন্যা চম্পাকে পার্শ্ববর্তী কলাপাড়া উপজেলার চাকামুইয়া ইউনিয়নের গামরীবুনিয়া গ্রামের কাদের হাওলাদারের ছেলে বাবুল হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের ১২ দিনের (১২ জানুয়ারী) মাথায় বন্ধুর বাড়ীতে বেড়ানোর কথা বলে স্ত্রী চম্পাকে নিয়ে যান স্বামী বাবুল হাওলাদার ও অন্য আসামীরা। এরপর থেকে নববধূ চম্পা নিখোঁঁজ হয়। এ ঘটনায় চম্পার বাবা চাঁন মিয়া সিকদার ওই বছর ১৪ জানুয়ারী তালতলী থানার জামাতা বাবুলের বিরুদ্ধে সাধারণ ডারেয়ী করেন।
নিখোঁজের ১০ দিন পর ওই বছর ২২ জানুয়ারী নববধু চম্পার স্বামী বাবুল হাওলাদারের বাড়ীর সন্নিকটে মাঠে মাটি চাপা দেয়া অবস্থায় তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার চম্পার বাবা চাঁন মিয়া সিকদার বাদী হয়ে ওইদিন কলাপাড়া থানায় ঘাতক বাবুল হাওলাদারকে প্রধান আসামী করে ১১ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার দের মাস পর ২০২০ সালের ৭ মার্চ পুলিশ প্রধান আসামী ঘাতক বাবুলকে গ্রেফতার করে। ঘাতক বাবুল হাওলাদার থানায় ও আদালতে তার সহযোগীর নাম উল্লেখ করে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে দেন। তৎকালিন কলাপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) আসাদুজ্জামান আসাদ প্রধান আসামী বাবুল হাওলাদারকে অভিযুক্ত করে অন্য সকল আসামীকে অব্যহতি দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এ অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে মামলার বাদী আদালতে নারাজি দেন। আদালতের বিচারক মামলার পুনরায় তদন্তের জন্য পটুয়াখালী পিবিআইতে ন্যাস্ত করেন। কিন্ত পিবিআইর তদন্তকারী কর্মকতার্ মোঃ আব্দুল মতিন খাঁন প্রধান আসামীর স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে দেয়া আসামী এবং এজাহার নামীয় আসামীদের অব্যাহতি দিয়ে শুধু প্রধান আসামী বাবুলকে আসামী রেখে গোপনে গত বছর ২৩ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। ওই অভিযোগ পত্রে উল্লেখ আছে প্রধান আসামী ঘাতক বাবুল হাওলাদার নিজের পরিকল্পনাই তিনি স্ত্রী চম্পাকে হত্যা করেছেন। এ অভিযোগ পত্রের বিরুদ্ধে মামলার বাদী চান মিয়া কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আবারো নারাজি দেন। মঙ্গলবার আদালতের বিচারক আশিষ রায় তার নারাজি আবেদন আমলে নিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পটুয়াখালীর ডিবির ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী চাঁন মিয়া সিকদার বলেন, দুই দয়া তদন্ত হয়েছে। প্রত্যেকবারই তদন্ত কর্মকতার্ আমার কাছে টাকা দাবী করেছে। আমি টাকা দিতে না পারায় তদন্ত কর্মকতার্রা মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে প্রধান আসামীর আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়া আসামীও বাদ দিয়ে অভিযোগ পত্র দিয়েছেন। আমি ন্যায় বিচারের স্বার্থে আবারো তদন্ত চেয়েছি। আদালতের বিচারক অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবী নাথুরাম ভৌমিক বলেন, বাদীর নারাজি আবেদন বিচারক আমলে নিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পটুয়াখালী ডিবির ওসিকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।