নাজিম হাসান,রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের ৩৫০ কিলোমিটার পূর্বে আল আহসা শহরের হুফুফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি এলাকায় একটি সোফা কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়াদের মধ্যে চারজন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার। এদের মধ্যে বারই পাড়া গ্রামের চাচা-ভাতিজাসহ তিন জন ও মাধাইমুড়ি গ্রামের এক জন। যাদের মধ্যে সাত বছরের প্রবাসী রুবেল হোসাইন নয় মাস ছয় দিন আগে মোবাইল ফোনে ভিডিও কনফারেন্সে বিয়ে করেন।
প্রেম করে বিয়ে হলেও স্বামীর সঙ্গে সাক্ষত হওয়ার আগে বিধবা হলেন কলেজ ছাত্রী মরিয়ম আক্তার। হঠাৎ প্রবাসী স্বামীর মৃত্যুর খবরে যেন আকাশ ভেঙে পড়ে কলেজ ছাত্রী মরিয়ম আক্তারের। আহাজারি করা মরিয়মকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা পাচ্ছেন না স্বজনরা। বিয়ের আগে দুজনের মধ্যে প্রেম বিনিময় হয়েছিল। বিয়ের অল্প কয়মাসের মধ্যে বিধবা হওয়া মরিয়ম এখন পাগল প্রায়।
মরিয়ম জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে শেষ কথা হয়েছিল। দেশে আসার জন্য শুক্রবার কাগজ পত্র জমা দেওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার রাতেআবার কথা বলবে বলেছিল। রাতে কলও দিয়েছিলেন মরিয়ম। কিন্তু কেউ রিসিভ করেনি। শনিবার সকাল ৮টার দিকে রুবেলের প্রবাসী বড় ভাই ফোনে জানান ফার্নিচারের কারখানায় অগ্নিকান্ডে রুবেল মারা গেছে।
জানা গেছে, তিন ভাইয়ের মধ্যে রুবেল সবার ছোট। ২০১৬ সালে সৌদি আরব পাড়ি জমান রুবেল। তার বড় দুইভাই আগে থেকেই প্রবাসী। বড় ভাই সৌদি আরব এবং মেজো ভাই দুবাই থাকেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে রুবেল সবার ছোটে। স্থানীয় দালালকে ১৬ কাঠা জমি লিখে দেওয়া ছাড়াও দেড় লাখ টাকা নগদ দিয়ে ২০১৬ সালে সৌদি আরব পাড়ি জমান রুবেল।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় সৌদি আরবের দাম্মামে ফার্নিচারের কারখানায় আগুনে আট জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বারই পাড়ার জফির উদ্দিনের ছেলে রুবেল হোসাইন, একই এলাকার জমিরের ছেলে মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম, শাহাদাত হোসাইনের ছেলে মো. আরিফ, বাগমারার বড় মাধাই মুরির আনিসুর রহমান সরদারের ছেলে ফিরুজ আলী সরদার।