দুর্গাপুরঃ(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি
নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে স্বপ্ন পূরণের যুদ্ধে সন্তানকে জয়ী করেন অদম্য মা। প্রতিটি সন্তানের জয়ের গল্পের নেপথ্যে যার সবচেয়ে বড় অবদান তিনি হচ্ছেন মমতাময়ী মা। তেমনি এক ‘স্বপ্নজয়ী মা’ হয়ে উঠার গৌরব অর্জন করেছেন নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভার মোক্তার পাড়া গ্রামের ঊষা রানী দে।
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে আজ বিশ্ব মা দিবস-২০২৩ উপলক্ষে ‘স্বপ্নজয়ী মা’ হিসেবে উষা রানী কে সম্মাননা স্মারক দিয়েছেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদফতর। রোববার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উষা রানীর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জহুরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মেহের উল্লাহ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ফাহমিদ নাসরিন জুলি, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন, প্রেসক্লাব সাধারন সম্পাদক জামাল তালুকদার, উপজেলা তথ্য আপা জান্নাত আরা পপি।
৫৪ বছর বয়সী এই আলোকিত নারী নেত্রকোনা জেলার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর পৌরসভার মোক্তারপাড়া গ্রামের অধিবাসী। তিনি ২য় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করতে পারলেও গৃহ পরিচালিকার কাজ করে সন্তানদের পড়িয়েছেন সেরা বিদ্যাপীঠে। সার্টিফিকেট মাপে শিক্ষিত না হলেও মনের আলোয় শিক্ষিত নারী ঊষা রানী দে। সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতা এবং অপ্রতুল শিক্ষা ব্যবস্থার মাঝেও তিনি সন্তানদের করে তুলেছেন শিক্ষিত, ন্যায় পরায়ন ও সমাজে সু-প্রতিষ্ঠিত।
সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উদাহরণ টেনে সব সময়ই সন্তানদের উৎসাহ দিতেন এবং বর্তমানে তার সন্তানেরা সুনামের সঙ্গে চাকরিতে নিয়োজিত। শুধু তাই নয় চাকরির পাশা পাশি উদ্যোক্তা হবার স্বপ্ন দেখাতেন ছেলে-মেয়েদের। ছেলে শঙ্খদীপ দে শান্ত উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কর্যালয়ের অধীনে কিশোর কিশোরী ক্লাব প্রকল্প‘র আবৃত্তি শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত আছেন পাশাপাশি বেসরকারী স্কুলের একাডেমিক সুপারভাইজার ও মায়ের অনুপেরনায় নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে সুসং কুঞ্জ ঘর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট পরিচালনা করছেন। নিজে পড়তে না পারার কষ্ট সন্তানদের মাঝে দেখতে চেয়েছেন তিনি। মা হিসেবে এটাই তার সফল সার্থকতা। সমাজের প্রতিটি মা হোক ঊষা রানী দে‘র মতো এমনটাই আশা করছেন এলাকাবাসী।
ঊষা রানী দে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ আমাকে যে মুল্যায়ন দিয়েছে, এতে আমি খুবই খুশি। ছোট বেলা থেকে পড়াশোনার সখ ছিলো আমার, কিন্ত নানা প্রতিবন্ধকতায় তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আমি না পড়তে পারলেও আমার সন্তাদের আমি মানুষ করতে পেরেছি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। সেইসাথে বলতে চাই, শত কস্ট হলেও কেউ সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধ করবেন না।