কাজী নজরুল ইসলাম, চাঁদপুরঃ
চাঁদপুরের কচুয়ায় যৌতুক না পেয়ে স্ত্রী নাজমা আক্তার কে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যার দায়ে ১৩ বছর পর স্বামী আব্দুস ছালামকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার ১২ জুন দুপুরে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী এই রায় দেন।
রায় প্রদানকালে দন্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুস ছালাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ পি পি খোরশেদ আলম শাওন।
মামলার অভিযোগ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে ,মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী জেলার কচুয়া উপজেলার ৬নং কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের তেতৈয়া গ্রামের মৃত আয়েত আলীর ছেলে আব্দুস ছালাম। পেশায় তিনি সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক। হত্যার শিকার নাজমা একই উপজেলার একই ইউনিয়নের নাহারা গ্রামের মো. আবু তাহেরের মেয়ে নাজমা আক্তার।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ১০ এপ্রিল নাজমা ও সালামের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় কনে পক্ষ সালামকে ১ লাখ টাকা মূল্যমানের জিনিপত্র দেয়। প্রায় একবছর তাদের দাম্পত্য জীবন ভালো চলছিলো এবং তাদের কন্যা সন্তান জন্ম হয়। এরপর বিভিন্ন সময় সিএনজি চালিত অটোরিকশা ক্রয় করার জন্য নাজমার কাছ থেকে তার স্বামী ছালাম আরো যৌতুকের টাকা দাবী করে।
ঘটনার দিন অর্থাৎ ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টার দিকে ২ লাখ টাকা যৌতুকের দাবী নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ছালাম নাজমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে সে গুরুতর আহত হলে তাকে প্রথমে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৪ দিন পর ১৪ অক্টোবর হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাজমার মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় ১২ অক্টোবর নাজমার বড় ভাই মো. সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে নাজমার স্বামী ছালামকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কচুয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ছালামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলাটির তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় কচুয়া থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরল ইসলাম খানকে। তিনি তদন্ত শেষে ১০১২ সালের ১৭ জানুয়ারি আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। আদালত আব্দুস সালামকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।