কামরুল হাসান,ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
আজ রবিবার ১৯ নভেম্বর ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ, আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘নারী-পুরুষের লিঙ্গ সম্পর্ক উন্নয়ন’৷ বিশ্বব্যাপী সমাজ ও পরিবারে পুরুষদের বীরত্ব প্রকাশের জন্য নয় বরং অবদানের স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে পুরুষ দিবস উদযাপনের সূচনা হয়। পুরুষ ও ছেলেদের স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, পুরুষদের মধ্যে লিঙ্গভিত্তিক সমতা, বালক ও পুরুষদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং পুরুষের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার লক্ষ্যে এ দিনটি উদযাপন করা হয়ে থাকে।বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বাংলাদেশে ‘এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন’ দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় এবং ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে উদযাপন বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে।
পুরুষ দিবস পালনের ইতিহাস বেশ পুরনো। ১৯২২ সাল থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালন করা হতো রেড আর্মি অ্যান্ড নেভি ডে। এ দিনটি পালন করা হতো মূলত পুরুষদের বীরত্ব ও ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে। গত শতকের ষাটের দশক ১৯৬৮ খ্রীষ্টাব্দে আমেরিকান বিখ্যাত সাংবাদিক জনপি হ্যারিস ফেব্রুয়ারিতে সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে তার লিখিত একটি নিবন্ধে ২৩ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস হিসেবে পালন করতে অনেকেই আগ্রহী বলে মত প্রকাশ করা হয়।
নিবন্ধে বলা হয়, আগ্রহীরা ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মতো একই ধরনের একটি দিবস নির্ধারণ করে পালন করতে চান। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়া ও মাল্টায় বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারীতে পুরুষ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু সেই সময়ে ব্যাপক প্রচারণার অভাবে পুরুষ দিবস ততটা জনপ্রিয় করে তুলতে পারেনি। ১৯৯৯ সালে জিরোম টিলাকসিংয়ের নির্ধারিত ১৯ নভেম্বর দিনটিই বিশ্ব পুরুষ দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায়। সে সময় ক্যারিবীয় অঞ্চলে দিবসটি ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। তবে দিন দিন দিবসটির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ২০০২ সালে দিবসটির নামকরণ করা হয় ‘ডিফেন্ডার অফ দ্য ফাদারল্যান্ড ডে’। তখন থেকে রাশিয়া, ইউক্রেনসহ তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে এ দিবসটি পালন করা হতো। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, কলম্বিয়া, রাশিয়া ও চীনে উদ্যাপন করা হতো দিবসটি। তবে ভিন্ন ভিন্ন এইা উদ্যোগ তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। একসময় বন্ধও হয়ে যায়।
আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসে পুরুষের মাঝে স্বাস্থ্য সমস্যাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য ও সামাজিক সমস্যা নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। নারী-পুরুষের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন বিষয়ক প্রচারণা, নারী-পুরুষ সমতার প্রচার, পুরুষদের মধ্যে ইতিবাচক আদর্শ চরিত্রের গুরুত্ব তুলে ধরা, পুরুষ ও বালকদের নিয়ে গড়ে ওঠা বিভিন্ন সংস্কার ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করা, পুরুষ ও বালকদের অর্জন ও অবদানকে তুলে ধরা হয়। তাই আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস একজন পুরুষকে ভালো মানুষ হওয়ার মূল্যবোধ, চরিত্র এবং দায়িত্বের প্রতি উৎসাহিত করার জন্য এই উদ্দোগ।
পুরুষ দিবসের উদ্দেশ্য পুরুষের অভিজ্ঞতাকে সবার কাছে তুলে ধরা নারী দিবসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা নয়। তাই সচেতনতা বাড়াতে দিবসটি উদযাপন করার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।