মনিরুল ইসলাম,বিশেষ প্রতিনিধঃ
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়ন পরিষদ উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কবির তালুকদার কে চেয়ারম্যান হিসেবে জেতাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের কিছু সংখ্যক নেতা কর্মীরা।এমনকি তারা প্রকাশ্যে তার পক্ষে ক্যাম্পিং সহ বিভিন্ন সভা সমাবেশ করছেন।
এ সংক্রান্ত কিছু ছবি ও ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছরিয়ে পরেছে।
প্রার্থী কবির তালুকদার বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর মহিউদ্দিন আহমেদের আপন চাচাতো ভাই বলে জানা গেছে।
২০১০ সালে ২৮ জানুয়ারী কেন্দ্রীয় কারাগারে মেজর মহিউদ্দিনের ফাঁসী কার্যকর হয়। পরবর্তীতে মহিউদ্দিনের মৃত দেহ রাঙ্গাবালী উপজেলার নেতাবাজার নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয়।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামীলীগ নেতাদের ইন্দোনে ও আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে কবির তালুকদার প্রার্থী হয়েছে। তাই আওয়ামীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরকেও খুনি পরিবারে পক্ষে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান আরিফ বলেন, গত ৫ জুন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান খান মামুন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হন। ফলে চেয়ারম্যান পদটিকে শূন্য ঘোষনা করে উপ-নির্বাচন দেন কমিশন।
আগামী ২৭ জুলাই রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত পদে তরুন প্রার্থী সিকদার জোবায়ের হোসেন, সোহাগ আকন, মিজানুর রহমান তসলিম এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কবির তালুকদার ভোটের লড়াইয়ে নেমেছে। কবির তালুকদার শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর মহিউদ্দিনের আহমেদের আপন চাচাতো ভাই। ২০১০ সালে ২৮ জানুয়ারী কেন্দ্রীয় কারাগারে মেজর মহিউদ্দিনের ফাঁসী কার্যকর হয়। ফাঁসি কার্যকরের পর মেজর মহিউদ্দিনের মৃত দেহ নিজ গ্রামের বাড়ী রাঙ্গাবালীতে নিয়ে আসলে দলমত নির্বিশেষে সকল জনতা ফুসে ওঠে। একপর্যায় তোপের মুখে তার দাফন সম্পন্ন হয়। অথচ সেই বঙ্গবন্ধুর স্বীকৃত খুনির ভাইয়ের পক্ষে ভোট চান সরকার দলীয় লোকজন।
উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও প্রার্থী সোহাগ আকন বলেন, আমি বুজতে পারছিনা এই প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর খুনির ভাই কিভাবে নির্বাচন করে? উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাদের ইন্দোন ও আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে কবির তালুকদার প্রার্থী হয়েছে, এমন মন্তব্য মাঠে রয়েছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন বলেন, মেজর মহিউদ্দিন আহমেদ স্বাধীন বাংলার প্রতিষ্ঠাতা শেখ মজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি। ২০১০ সালে যার ফাঁসি হয়। এলাকাবাসীও তার মরদেহকে প্রত্যাখান করে দাফনে বাধা দিয়েছিল। তার পরিবারকে নির্বাচনে সমর্থন দেয়া মানে স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে পাকিস্তানের বর্বরোচিতকে সমর্থন দেয়া। দলমত নির্বিশেষে তাকে প্রত্যাখান করা উচিত।
পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কাজী আলমগীর বলেন, যারা জাতীর পিতার খুনি এবং সেই পরিবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করছে। আমাদের সকলের উচিৎ এই খুনি পরিবারকে বয়কট করা। যদি বঙ্গবন্ধুর খুনির পরিবারকে কোন আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থক আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে কবির তালুকদার বলেন, মেজর মহিউদ্দিন আহমেদ আমার চাচাতো ভাই এবং আমি তৎকালীন ঘটনার সময়ে ছোট ছিলাম। জনপ্রিয়তায় শূন্য প্রার্থীরা এটা নিয়ে অপপ্রচার চালাতে চায়। আমি তাদের মুখোমুখি হবো।