
এস এম নাসির মাহমুদ,আমতলী প্রতিনিধিঃ
আমতলীতে মঙ্গলবার দুপুরে আট কিলোমিটার কঁাচা সড়ক পাকা করার দাবীতে ঘন্টাব্যাপী মানবন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে শতাধিক গ্রামবাসী। ইসলামপুর-ছোটনাউটা সমাজ কল্যান সোসাইটির উদ্যোগে উপজেলা পরিষদের সামনে এ মানবন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। মানবন্ধন শেষে ইউএনও নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
আমতলী সদর ইউনিয়নের কল্যানপুর থেকে ইসলামপুর স্লুইস গেট হয়ে হাফেজ প্যাদার খেয়াঘাট পর্যন্ত পঁাচ কিলোমিটার এবং সোনাউটা রব মোল্লার বাড়ী থেকে ইসলামপুর স্লুইস গেট হয়ে টিয়াখালী বাজার পর্যন্ত তিন কিলোমিটার কাঁচা সড়ক পাকা করার দাবীতে মঙ্গলবার সকালে আমতলী উপজেলা পরিষদের সামনে শতাধিক গ্রামবাসী ঘন্টাব্যাপী মানবন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। ইসলামপুর হাসানিয়া দাখিল মাদ্রাসা সুপার মাওলানা শাহআলম আল মারুফ এর সভাপতিত্বে মানবন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন, হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর মো,হারুন খান, আমতলী সদর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. জালাল হাওলাদার, সদর ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি মো. রেজাউল করিম ও মো. আব্দুর রাজ্জাক মাষ্টার, মইনুল ইসলাম হাসান, বাইজিদ দফাদার, প্রমুখ।
কল্যানপুর-ইসলামপুর-সোনাউটা-টিয়াখালী বাজার পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়কটি স্বাধীনতার পূর্ব থেকে কাঁচা অবস্থায় রয়েছে। স্বাধীনতার ৫৫ বছরেও সড়কটিতে কোন উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। বর্ষা ও শুকনো উভয় মৌসুমেই ৩ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ চরম ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করে। বর্ষা মৌসুমে সড়কটিতে হাটু সমান কাঁদার সৃষ্টি হওয়ায় মানুষের চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। কল্যানপুর, ইসলামপুর ও সোনাউট গ্রামের মধ্যে রয়েছে ইসলামপুর দাখিলী মাদরাসা, ইসলামপুর ইবতেদায়ী মাদরাসা, টিয়াখালী হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইসলামপুর কমিউনিটি ক্লিনিক, ছোনাউটা বোর্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছোনাউটা কমিউনিটি ক্লিনিক ও পশ্চিম ছোনাউটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩-৪ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। এসকল শিক্ষার্থীরা বর্ষা মৌসুমে এক হাটু কাঁদা পেরিয়ে স্কুলে এবং মাদরাসা আসা যাওয়া করে। কাঁদা এবং বৃষি বেড়ে গেলে শিক্ষার্থীদের তখন স্কুল এবং মাদরাসায় যাওয়া বন্ধ থাকে।
ইসলামপুর মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষাথী ইসমাইল ও রিয়াজ উদ্দিন জানান, বর্ষা মৌসুমে কাঁদার কারনে ঠিকমত মাদরাসায় যাতায়ত করতে পারি না।
একই কথা বলেন, ইসলামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাহিমা আক্তার ও ছোনাউটা বোর্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতী বেগম।
ইসলামপুর গ্রামের গ্রামের ষাটোর্ধ হাচন হাওলাদার বলেন, বাবা কি কমু বইশ্যা কালে রাস্তায় নামতে পারি না। কাঁদায় পা ব্যার ব্যারাইয়া ঢুইক্যা যায়।
ইসলামপুর গ্রামের সত্তোরোর্ধ চন্দ্রভানু বেগম বলেন, হারা বাইশ্যা ঘরে বইয়া সোমায় কাডাইতে অয়। কাঁদার লইগ্যা ঘরে গোনো একটুও বাইরাইেতে পারি না।
ইউপি সদস্য মো. হারুন অর রশিদ বলেন, কল্যানপুর-ইসলামপুর – সোনাউটা-টিয়াখালী ৮ কিলোমিটার সড়কটি বর্ষা মৌসুমে কাঁদায় পরিপূর্ন হয়ে যায়। ফলে হাজার হাজার গ্রামবাসীকে বর্ষা এবং শুকনো মৌসুমে অবর্ননীয় ভোগান্তি পোহাতে হয়। বর্ষা মৌসুমে অসুস্থ গর্ভবতী নারী কিংবা অন্য যে কোন বয়স্ক রোগীকে আমতলী হাসপাতালে আনা যায়না। ফলে নিরুপায় হয়ে গ্রাম্য ওঝা কবিরাজের উপর নির্ভও করতে হয়। তাই এই সকটি অতি দ্রুত পাকা করনের দাবী জানাই।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খান কলেন, গ্রামবাসী মানবন্ধন শেষে সড়ক পাকা করনের জন্য আমার নিকট একটি স্মারক লিপি প্রদান করেছে। ভিষয়টি আমি গুরুত্বেও সাথে বিবেচনা করবো।