
ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে এক কঠোর অভিযানে ৪টি মালিকবিহীন ড্রেজার মেশিন বিকল করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (১জুলাই) এই অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তরিকুল ইসলাম। অভিযানে ছাতক থানা পুলিশ এবং নোয়াকোট বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এই পদক্ষেপটি উপজেলাব্যাপী “বালু খেকোদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স” নীতির কঠোর বাস্তবায়নের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
স্থানীয়রা জানান, অপরিকল্পিত ও অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন, ভাঙন, কৃষি জমি ধ্বংস এবং জীববৈচিত্র্যের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সরকারের এই কঠোর অবস্থান এবং ধারাবাহিক অভিযান নদী ও পরিবেশ রক্ষায় অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন তারা। ছাতকে এই অভিযান প্রমাণ করে যে, প্রশাসন কোনোভাবেই অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের ছাড় দেবে না।
নদীর তীরবর্তী একজন বাসিন্দা বলেন, বছরের পর বছর ধরে আমরা দেখে আসছি, কীভাবে শক্তিশালী চক্র দিন-দুপুরে নদী থেকে বালু তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। প্রশাসনের আজকের এই পদক্ষেপে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও আশাবাদী। আমরা চাই, এই অভিযান যেন থেমে না যায় এবং প্রকৃত দোষীরা যেন আইনের আওতায় আসে। তাহলেই আমাদের নদী ও গ্রামগুলো রক্ষা পাবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, নদী আমাদের প্রাণ, আমাদের সম্পদ। কোনো প্রভাবশালী বা চক্রকে এই নদী ও পরিবেশ ধ্বংসের সুযোগ দেওয়া হবে না। সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশনা অনুযায়ী, আমরা অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে রয়েছি। আজকের অভিযানটি একটি সতর্কবার্তা। যারা এখনও এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত, তারা স্বেচ্ছায় সরে না দাঁড়ালে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগণের সম্পদ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
প্রসঙ্গত, ছাতক ও বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। ছাতক উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। গত কয়েক সপ্তাহে ছাতকের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালু বোঝাই নৌকা আটক এবং জড়িতদের জরিমানা ও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।