রনি আকন্দ,জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের বিভিন্ন গ্রামে হঠাৎ করে বেড়েছে চুরির ঘটনা। এসব এলাকায় গভীর রাতে হানা দিচ্ছে সংঘবদ্ধ চোরের দল। তাদের প্রধান টার্গেট গরু চুরি করা। এ ছাড়া ছোটখাটো যানবাহন এবং অন্যান্য জিনিসপত্রও চুরি হচ্ছে। এতে আতঙ্কে রাত কাটছে গ্রামবাসীর। এ অবস্থায় চুরি ঠেকাতে কিছু এলাকায় তারা দলে দলে ভাগ হয়ে প্রতিরাতে পাহারা দিচ্ছেন।
সদর উপজেলার কোমরগ্রাম দীঘিপাড়া ও কড়ই চকপাড়া গ্রামে এ দৃশ্য দেখা গেছে। এসব এলাকায় চোরের উৎপাত বাড়ায় ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানের দিকনির্দেশনায় পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জানা গেছে, রাতে জেলার বিভিন্ন গ্রামের যেসব সড়কে আলো কম থাকে বা অনেকটা নির্জন, সেসব এলাকায় চুরির ঘটনা বেশি ঘটছে। হঠাৎ করে চোরের উৎপাতে আতঙ্কিত গ্রামবাসী। এ ঘটনায় অভিযানও চালাচ্ছে পুলিশ। কিছু চোর ধরা পড়লেও বেশির ভাগ থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। গত কয়েক দিন আগে কোমরগ্রাম পশ্চিমপাড়া এলাকার মনসুর রহমানের ৫টি গরু চুরি হয়।
এমন অবস্থায় চুরি ঠেকাতে সদর উপজেলার বম্বু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেনের দিকনির্দেশনায় পাহারার ব্যবস্থা করা হয়। কোমরগ্রাম দীঘিপাড়া এলাকায় চুরি ঠেকাতে প্রতিদিন দায়িত্ব পালনের জন্য ৯ সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে। সেখানে রাত ১১টা থেকে ভোর পর্যন্ত হাতে লাঠি ও টর্চ নিয়ে টহল দিচ্ছেন গ্রামবাসী। অপরিচিত কেউ এলেই করা হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদ।
কোমরগ্রাম পশ্চিম পাড়ার মনসুর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা পরিবারের সবাই ঘুমাতে যাই। এরপর গভীর রাতে চোর এসে আমার বাড়ির দেয়াল টপকে গোয়ালে রাখা ৩টি গাভি, ১টি ষাঁড় ও ১টি বাছুরসহ ৫টি গরু নিয়ে যায়। এগুলোর বাজার মূল্য ৪ লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছি। কিন্তু এখনো গরু উদ্ধার হয়নি।’
রাতে দায়িত্বে থাকা দীঘিপাড়ার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমার প্রতিবেশীর বাড়িতে চুরির চেষ্টা করা হয়। তারা বাড়ির দেয়ালে উঠতেই লোকজন টের পায়। পরে চোর পালিয়ে যায়। আমরা অনেক আতঙ্কে ছিলাম। এ কারণে বাধ্য হয়ে পাহারা দিচ্ছি।’
একই গ্রামের বাবলু বলেন, ‘আমার বাড়িতে ৩টি গরু ও একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আছে। কয়েক দিন আগে দুবার চোরেরা আমার বাড়ির টিনের বেড়া কেটে ফেলে। এ সময় আমি ও আমার স্ত্রী টের পেয়ে চিৎকার করলে চোর পালিয়ে যায়।’
বম্বু ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জনগণের জানমাল রক্ষা করা একজন জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব। কয়েক দিন থেকে এ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় চোরের উপদ্রব বেড়ে যায়। চুরি ঠেকাতে কোমরগ্রাম দীঘিপাড়া ও কড়ই চকপাড়ায় সমন্বয় করে দল গঠন করা হয়েছে। তারা প্রতিদিন রাত জেগে ডিউটি করছেন। আমি নিজেও খোঁজখবর নিচ্ছি।’
এ বিষয়ে জেলা সদর থানার ওসি শাহেদ আল মামুন বলেন, ‘চুরি ঠেকাতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছে পুলিশ। আমরা জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় সর্বদা সজাগ রয়েছি। চোর চক্রের সঙ্গে জড়িতদের তথ্য সরবরাহের চেষ্টা করছি। আশা করছি, দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করতে পারব। এ ছাড়া আমরা জনগণকে সচেতন করতে উঠান বৈঠক ও আলোচনা সভা করছি।