জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মাঝিনা গ্রামে কলেজ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেকের ১ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ ও নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুল মোক্তাদির এ রায় দেন। এ সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিতি ছিলেন।
মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- পাঁচবিবি উপজেলার মাঝিনা গ্রামের শঙ্কর মহন্তের ছেলে রনি মহন্ত (৩২) ও খোরশেদ আলীর ছেলে কামিনী জাহিদ (৩৫)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফিরোজা চৌধুরী পিপি।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৬ মে রাতে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মাঝিনা গ্রামে জয়পুরহাট সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীকে নিজ বাড়িতে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এ সময় নিহতের পরিবারের লোকজন বাড়িতে ছিল না। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে পাঁচবিবি থানায় মামলা করেন।
এরপর ৭ মে রাতেই পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করে। ৮ মে রাতে গ্রেফতারকৃতরা জয়পুরহাট চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। রনি মহন্ত তার সহকর্মী জাহিদকে নিয়ে ৬ মে রাত ১টার দিকে ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থীর বাড়ির দেয়াল টপকিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর সুযোগ বুঝে রাত ২টার দিকে তারা ঘরে প্রবেশ করে প্রথমে রনি মহন্ত ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়। ভিকটিম চিৎকার করে এবং রনির বুকে খামচিয়ে ধরে।
তখন আসামিরা আয়েশার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে। এতে এক পর্যায়ে ভিকটিম বিছানায় নিস্তেজ হলে কামিনী জাহিদ ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতার দুজন আদালতে জবানবন্দীতে সেই ঘটনার রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন। ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থী মৃত্যুর পরও রেহাই পাননি পাষণ্ডদের হাত থেকে। ৮ মে রোববার রাতে জয়পুরহাট চীফ জুডিশিয়াল আদালতে আসামি রনি মহন্ত ও কামিনী জাহিদ জবানবন্দীতে তারা সত্যতা শিকার করেন।
পরবর্তীতে মামলার তৎকালীন তদন্তকারী ওসি তদন্ত হাবিবুর রহমান ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে সোমবার দুপুরে আদালতের বিচারক এ রায় দেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালতের পিপি ফিরোজা চৌধুরী। আর আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান।