ছাতক(সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের ছাতকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক রোগীকে স্বাস্থ্য সেবা না দিয়ে অশোভন আচরণের কারণে ডাক্তার-নার্সদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার (২৮সেপ্টেম্বর) উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পৌরসভার গণক্ষাই মহল্লার মো. লুৎফুর রহমান শাওন নামের ভুক্তভোগী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নিতে যান মো. লুৎফুর রহমান শাওন এ সময় জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মহসিন ২টি ইনজেকশন লিখে দেন। বাহিরের ফার্মেসি থেকে ইনজেকশন ক্রয় করে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইনজেকশন পুশ করার জন্য রুবেল নামের একজন স্টাফের নাম্বারে ফোন দিতে বলেন রুবেলকে ফোন দেয়ার ২০ মিনিট পরে এসে রুবেল ইনজেকশন পুশ করে।
ইনজেকশন পুশের পর পেটের ব্যথা না কমায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে হাসপাতালের নতুন বিল্ডিংয়ের ৪র্থ তলার পুরুষ ওয়ার্ডে তাকে ভর্তি দেন। ওয়ার্ডে গিয়ে কর্তব্যরত নার্স, আয়া বা ওয়ার্ড বয়কে অনেক খোজাখোজির পর না পেয়ে হাসপাতালের ভর্তি রোগীদের কাছে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন ডিউটি রেখে দরজা বন্ধ করে ঘুমাচ্ছিলেন তারা। তখন রোগীর সাথে থাকা তার ছোটভাই মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান সেই রুমের দরজায় অনেক ডাকা-ডাকির পর দরজা খুলে এতো ডাকা-ডাকি করছেন কেনো কারণ জানতে চান ইউনিফর্মবিহীন নার্স। তাদের পরনে মেডিকেলের নির্ধারিত নার্সের পোষাক না থাকায় তাদেরকে চিনতে না পেরে ডিউটিতে কে আছেন জিজ্ঞেস করলে ক্ষেপে গিয়ে অশোভন ও দূর্ব্যবহার করেন এবং তারা মাসিকে খোঁজে বের করে সিট নিতে বলেন। ওই সময় মাসিও ৪র্থ তলার নার্সদের ডিউটি রুমে ঘুমে ছিলেন। অনেক ডাকা-ডাকির পর মাসি ঘুম থেকে উঠে রোগীর বিছানার ব্যবস্থা করে দেন। ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ ফ্যান লাইট নষ্ট। ওয়ার্ডে ভর্তির পর স্যালাইন ইনজেকশন পুশ করে ডিউটিতে থাকা নার্স-আয়া পুনরায় সেই রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘন্টা খানেক পর পেটে ব্যাথা আরো বাড়লে ঘুমিয়ে থাকা নার্সের রুমে গিয়ে অনেক ডাকা-ডাকির পর তাদের সাড়া শব্দ না পেয়ে কর্তব্যরত ডাক্তারের খোঁজে জরুরি বিভাগে গিয়েও কোনো ডাক্তার বা কাউকে খোঁজে না পেয়ে নিরুপায় হয়ে চিকিৎসার জন্য উক্ত হাসপাতাল ত্যাগ করে চলে যান মো. লুৎফুর রহমান শাওন ও তার সাথে থাকা ছোটভাই মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান।
এ ব্যপারে মো. লুৎফুর রহমান শাওন বলেন, আমার পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর মেডিকেল থেকে তাকে কোনো ধরনের ঔষধ দেয়া হয় নি। অসুস্থ শরীর নিয়ে বাধ্য হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করি। ভর্তি হওয়ার পরও হাসপাতাল থেকে সরকারী কোনও ঔষধ দেওয়া হয় নি। অথচ সরকার প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার ঔষধ বরাদ্দ দিচ্ছে। এরকম চিকিৎসা ব্যবস্থা কোথায় যাবে সাধারণ মানুষ।
এ ব্যপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও সাইদুর রহমান অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্যও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাজীব চক্রবর্তী বলেন, আমি জরুরি একটি মিটিংয়ে ঢাকায় আসছি। অভিযোগের বিষয়টি তিনি আরএমও এর মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা ব্যবস্থা নেয়া হবে।