মীর আমান মিয়া লুমান,ছাতক প্রতিনিধিঃ
ছাতক উপজেলার সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবন ও হলরুম নির্মাণকাজের শুরু থেকেই ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। নিম্নমানের বালু, পাথর ও রড দিয়ে কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম আই ট্রেডিং অ্যান্ড কোম্পানি। কার্যাদেশ বহির্ভূতভাবে বালু, পাথর, সিমেন্ট ব্যবহার করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ রকম অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয় নিয়ে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের নেই কোনো তদারকি।
গত ২৯মে বিকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের চতুর্থ তলার ঢালাই কাজে সকাল থেকে প্রকাশ্যে নিম্নমানের মাটি মিশ্রিত পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে। সংবাদকর্মী মাটি মিশ্রিত পাথর দেখে উপজেলা প্রকৌশলী আফছর আহমেদের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি কে? আপনি কি ইঞ্জিনিয়ার? এসব কিছু টেষ্ট করা আছে। এগুলো দেয়া যাবে কোন সমস্যা নেই।
সংবাদকর্মী প্রকৌশলীর কথায় সন্তুষ্ট না হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরের জামান চৌধুরীর সাথে এ অনিয়মের কথা বলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাথে সাথে প্রকৌশলী আফছরকে সরজমিনে গিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে প্রকৌশলী আফছর আহমেদ সরজমিনে গিয়ে পাথরের মাঝে অতিরিক্ত মাটি মিশ্রিত দেখে, এসব পাথর ব্যবহার করতে নিষেধ করে সংবাদকর্মীকে বলেন আমি প্রথমে আপনার কথা বুজতে পারিনি। আমি ভেবেছিলাম আপনি বালুর কথা বলেছেন। এসব পাথর ব্যবহার না করার জন্য বলে দিয়েছি। কিন্তু, প্রকৌশলী ব্যবহার না করার কথা বলে যাওয়ার পরও তারা এসব পাথর ব্যবহার করেছে। তাছাড়া সকাল থেকে এই পাথর দিয়েই কাজ করায় ভবনের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়, ছয় কোটি ছয় লক্ষ বিয়াল্লিশ হাজার ছয়শত একাত্তর টাকার ছাতক উপজেলার সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবন ও হলরুম নির্মাণকাজের শুরু থেকেই ব্যাপক অনিয়ম করা হচ্ছে। নিম্নমানের বালু, মাটি মিশিত পাথর ও মরিচিকা যুক্ত রড দিয়ে কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম আই ট্রেডিং অ্যান্ড কোম্পানি। উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ রকম অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয় নিয়ে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের নেই কোনো তদারকি। ভবন নির্মাণের শুরু থেকে টিলার নিম্নমানের ও স্বল্প মূল্যের লাল পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে ভবন নির্মাণে। নিম্নমানের পাথরের ওপর ভাঙ্গা চুনাপাথর রেখে লাল পাথরগুলো ঢেকে রাখা হয়েছে। এর আগেও এই ভবনের ফাইলিংয়ের পিলার নির্মানের সময় ব্যপক অনিয়ম করে প্রায় ৯০টি পিলার নির্মাণ করেছে। ফাইলিং পিলার, ঢালাই সহ বিভিন্ন কাজ নিম্নমানের মালামাল তৈরি করায় পুরো কাজের গুণগত মান নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তারা এ অনিয়ম করে দেশের এবং এই অঞ্চলের ক্ষতি করে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আফছর আহমেদ বলেন, মাটি মিশ্রিত পাথর ব্যবহার করা হয়নি। পাথরের নিছে কিছু কাদা ও ময়লা মিশ্রিত পাথর ছিল, আমরা এগুলো ব্যবহার করতে নিষেধ করেছি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার এতো কিছু জানার প্রয়োজন নেই। আমি জানি আমার কাজের কোয়ালিটি অনেক ভালো। আমার কাজে কনফিডেন্স আছে।
এ ব্যপারে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম বলেন, আমি এ বিষয়ে খবর নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।