ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ডকইয়ার্ড ব্যবসায়ী সজীব হত্যা মামলায় কুখ্যাত আসামি আলী ডাকাতকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, ভৈরব ক্যাম্পের সদস্যরা।
সোমবার (২২ মে) সাড়ে ৩টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার দাউদপুর এলাকা থেকে সজীব হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযুক্ত অন্যতম মূলহোতা দুর্ধর্ষ ডাকাত আলী হোসেন ওরফে আলী ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামি ডাকাত আলী হোসেন উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আদর্শপাড়া এলাকার মৃত বশির উদ্দিনের ছেলে। এর আগে ঘটনার পর ভৈরব থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে সোহাগ মিয়া ও সাইদুল ইসলাম নামে আরও দুজনকে গ্রেফতার করে।
র্যাব ক্যাম্প এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আক্কাছ আলী জানান, আলোচিত সজীব হত্যার ঘটনার পর থেকে র্যাব ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে যাচাই ও হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকায় দুর্ধর্ষ ডাকাত আসামি আলী হোসেনকে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার দাউদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, আসামি আলী হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গেল ১৩ মে ঘটনার দিন দুপুরে আসামি সোহাগ তাকে মুঠোফোনে সন্ধ্যার সময় কালিকাপ্রসাদ এলাকায় থাকতে জানায়। তারপর ঘটনার দিন আলী ডাকাত সন্ধ্যা ৭টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় তার সহযোগী সোহাগ (৩২), ফজলু (৫০), বুদ্দি (৩০), একত্রিত হয়। পরবর্তীকালে ফজলু কালিকাপ্রসাদ বেসিক শিল্পনগরী এলাকায় সজীব হত্যার ঘটনাস্থলের পাশে মাছের পুকুর থেকে মাছ ধরার সূতার জাল নিয়ে আসে। তারপর তারা জালের এক মাথা গাছের খুঁটিতে ও অন্য মাথা বিদ্যুতের পিলারের সাথে ঢিল করে বাঁধে। এই সময় সজীব মিয়ার মোটরসাইকেল দ্রুত গতিতে আসা শুরু করলে তারা জালের দড়িটাকে বাইকারের বুক পর্যন্ত উঠিয়ে শক্ত করে টানটান করে ধরে। এতে করে মোটরসাইকেল থাকা সজীব মিয়া জালের সাথে ধাক্কা লেগে ছিটকে দুরে পড়ে যায়।
এরপরে ডাকাতরা সজীব মিয়াকে গুরুতর আহত করে টাকা পয়সা ও মোবাইল ছিনতাই করে পালিয়ে যায়।
আসামি ডাকাত আলী হোসেনের বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনাসহ ৬টি মামলা রয়েছে।
জানা যায়, গেল ১৩ মে ডকইয়ার্ড ব্যবসায়ী সজিব মিয়া মোটরসাইকেল যোগে নিকলী থেকে ভৈরবে আসার পথে ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় ছিনতাইকারীদের হাতে নিহত হয়। পরে গেল ১৫ মে সোমবার নিহতের স্ত্রী হামিদা বেগম স্বর্ণা ভৈরব থানায় ৩/৪ জনকে অজ্ঞাত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ও ডিবি পুলিশের অভিযানে ওইদিন মধ্যরাতে প্রথমে নরসিংদীর বেলাব থেকে সোহাগ মিয়াকে গ্রেফতার করে এবং পরে তার দেওয়া তথ্যে গত শনিবার (২০ মে ) ভোরে পৌর শহরের কমলপুর গাছতলাঘাট এলাকা থেকে আরেক আসামি সাইদুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেফতার করে পুলিশ।